দেশের ৪২টি জেলায় ২০ নভেম্বর পর্যন্ত যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হবে

দেশের যাত্রাদলগুলোকে উজ্জীবিত করতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ৪২ টি জেলায় বিভিন্ন দলের পরিবেশনায় যাত্রাপালা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় সকলের জন্য উন্মুক্ত ৬-২০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই উৎসব।
এদিকে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ২ শতাধিক যাত্রাদলকে নিবন্ধিত করেছে। যাত্রাশিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বিভিন্ন সময় নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে।
সেগুলোর মধ্যে – যাত্রাশিল্প উন্নয়ন কমিটি গঠন ও নিয়মিত সভা আয়োজন; ৬৪টি জেলাভিত্তিক দেশীয় যাত্রাপালা নির্মাণ ও প্রদর্শনীর আয়োজন; যাত্রাশিল্পীদের পেশাগত মান উন্নয়নের জন্য অভিনয়, নৃত্য, মেকাপ, পোষাক এবং  প্রপস এর ব্যবহার শীর্ষক কর্মশালা আয়োজন; জাতীয় যাত্রাপালা উৎসব আয়োজন; প্রতœ যাত্রা ‘ঈশা খান’ নির্মাণ ও প্রদর্শনী; ‘যাত্রাশিল্পে নারী’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন; ভারতীয় বিশিষ্ট যাত্রা গবেষক ড. প্রভাত কুমার দাসকে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানিয়ে সেমিনার ও মত বিনিময় সভা আয়োজন।
নিবন্ধনের শর্তাবলি যাত্রাদলগুলি যথাযথভাবে পালন করছে কি-না তার প্রতিবেদনের জন্য স্থানীয় প্রশাসন এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে তদারকি করা; মুনীর চৌধুরীর ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ যাত্রাপালা নির্মাণ ও  প্রদর্শনী; ১০০টি দেশীয় যাত্রাপালা ও শতাধিক ভারতীয় যাত্রাপালা সংগ্রহ; ‘স্মৃতিসত্তা ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক যাত্রাশিল্পী অমলেন্দু বিশ্বাসকে স্মরণ ও সেমিনার আয়োজন; একশ’টি দেশীয় যাত্রাপালা ১৯জন বিশিষ্ট গবেষক/লেখক দ্বারা মূল্যায়ন; যাত্রা পালাকারদের নিয়ে কর্মশালা আয়োজন; যাত্রাদলের উপর জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা; কুষ্টিয়া এবং ঝিনাইদহ জেলায় যাত্রা উৎসবে জন্য এক লাখ টাকা অনুদান প্রদান; ১৪টি যাত্রা উৎসবের মাধ্যমে ১৭৮টি যাত্রাদলকে নিবন্ধন প্রদান; কর্মশালাভিত্তিক ৫টি যাত্রা  প্রযোজনা নির্মাণ ও প্রদর্শনী।
সারা বাংলাদেশ থেকে নিবন্ধিত যাত্রাদলগুলির স্বত্ত্বাধিকারী, ম্যানেজার, অভিনয়শিল্পীসহ সংশ্লিষ্ট কলা-কুশলীদের সাথে নিয়মিতভাবে মতবিনিময় সভা আয়োজন; দেশ অপেরা, লোকনাট্য গোষ্ঠী, জয়যাত্রা, থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশীয় যাত্রাপালা নির্মাণ ও উৎসব আয়োজন।
৫টি দেশীয় নতুন যাত্রা প্রযোজনা নিয়ে ৩দিনব্যাপী যাত্রা উৎসব আয়োজন-২০১৯; বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ‘যাত্রাপালার বিবেক’ নিয়ে গবেষণাধর্মী কর্মশালা ও অনুষ্ঠান আয়োজন; গৌরাঙ্গ আদিত্য, ভিক্টর দানিয়েল ও সুলতান সেলিম-কে ২০১৯ এ সম্মাননা প্রদান; যাত্রাশিল্পের নবযাত্রা শীর্ষক  প্রকাশনা  প্রকাশ; করোনাকালীন যাত্রাশিল্পীদের অনুদান প্রদান; করোনাকালীন যাত্রাদলগুলো নিয়ে অনলাইনে যাত্রা অনুষ্ঠানের আয়োজন।
শিল্পকলা একাডেমি সূত্র জানায়, লোক ঐতিহ্যের এক সমৃদ্ধ রূপায়ণ যাত্রাপালা। ঐতিহ্য, চিন্তা, মূল্যবোধকে ধারণ করেই যাত্রাপালার বিস্তার। আবহমান বাংলার চিরায়ত লোকসংস্কৃতির অন্যতম শাখা যাত্রাপালা বরাবরই গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত। তৃণমূল মানুষের অন্তরে বাস্তবিক উন্নয়নের এক দর্পন স্বরূপ কাজ করে যাত্রাপালা।
সূত্র জানায়, ‘শিল্প সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ’ গড়ার অভিলক্ষ্যে ‘অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় শিল্প নিয়ে পৌছে যাবো আমরা উন্নতির শিখরে’ এই প্রতিপাদ্যে ‘গণজাগরণের শিল্প আন্দোলন’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য দেশব্যাপী শিল্পযজ্ঞ পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। এর অংশ হিসেবে গত ২ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত  প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে যাত্রা উৎসব।(বাসস)