নতুন ভ্যাট আইন আন্তর্জাতিক মানের:এনবিআর

১৯৯১ সালের ভ্যাট আইন ১টি দেশজ আইন। এক্ষেত্রে কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লেভার নাই। তবে নতুন ভ্যাট আইনটি আন্তর্জাতিক মানে করা হয়েছে। বুধবার ১৭ মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসাইন এসব কথা জানিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দফতর সংলগ্ন অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল কক্ষে ‘উচ্চশিক্ষা, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং নতুন ভ্যাট নীতি বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আন্তর্জাতিক ও মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষে যুগোপযোগি করে ভ্যাট আইন করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই আইন প্রনয়নে অর্থনীতির শাখা-প্রশাখাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

বিআইডিএস এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, অনেকে বাজেট এলেই বলে গরীব মারার বাজেট, ভ্যাটকে বলে ব্যবসায়ীদেরকে ধ্বংস করার ভ্যাট। কিন্তু এসব না বলে সুনির্দিষ্ট সমস্যা নিয়ে কথা বলা উচিত। তিনি বলেন, কর প্রদানের ক্ষেত্রে যে সুশাষণের অভাব রয়েছে, তা দূর করা উচিত। তবে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই ভ্যাট টেক্স দিতে হবে। আর উন্নত দেশে পরিণত হতে চাইলে অবশ্যই কর আদায়ের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে জনগণের করের টাকায় কোথায় উন্নয়ন হবে তা স্পষ্ট হলে, কর আদায় সহজ হয় বলে তিনি মনে করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, উচ্চশিক্ষা খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া দরকার। এ ছাড়া উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কারিগরিসহ শিক্ষার সকল স্তরে বাজেট বাড়ানো প্রয়োজন। উপাচার্য আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার নারী শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ায় নারীরা সকল ক্ষেত্রে এগিয়েছে। নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন খাতে বাজেট বরাদ্দ আরও বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের ৫০ ভাগ মানুষ নারী। এই অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে পেছনে রেখে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: রহমত উল্লাহ বলেন, যেসব খাতের ওপরে ভ্যাট বসানো হয়েছে, তা যথার্থ হয়নি। এমনকি এত দ্রুত ভ্যাট আইন করাও যথার্থ হয়নি। এ ছাড়া শিক্ষা কোনো বাণিজ্য না হওয়া সত্ত্বেও এক্ষেত্রে ভ্যাট ধার্য করা ও ধনী-গরীব সবার ওপরে সমান হারে ভ্যাট ধার্য করাকে ঠিক হয়নি বলে মনে করেন তিনি।

মূল প্রবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. বজলুল হক খন্দকার এবং সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বাজেটে উচ্চশিক্ষা খাতকে পৃথক গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানান। একইসঙ্গে উচ্চশিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে জানান। এ ছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কীম চালু, নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত ভ্যাট অব্যাহতি, অসহায় ও রোগাক্রান্ত প্রবীণদের কল্যাণে প্যালিয়েটিভ কেয়ার সেন্টার স্থাপন এবং সক্ষম প্রবীণদের জন্য সার্ভিস পুল গঠন করার বিষয়ে বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো: কামাল উদ্দীন।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/১৭ মে ২০১৮