পর্যটক বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পর্যটন মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে : বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেছেন, দেশে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে পর্যটন মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেবে।
আজ সচিবালয়ে তার সঙ্গে বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে একথা জানান।
মুহাম্মদ ফারুক খান আরও বলেন, পর্যটন শিল্পে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা কীভাবে আরো বৃদ্ধি করা যায়, বিশেষ করে ভারত থেকে আরও বেশি পর্যটক কিভাবে বাংলাদেশ আসতে পারে সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। পর্যটক বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে দুই দেশে পর্যটন মেলা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। পর্যটকদের জন্য দুই দেশের মধ্যে ভিসা সহজ করার বিষয়েও কথা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, সিভিল এভিয়েশন ও পর্যটন শিল্পে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্ব আরো শক্তিশালী হবে। এই দুই খাতে সম্পর্ক বৃদ্ধির ব্যাপারে ভারতের পক্ষ থেকে আমাদেরকে কিছু প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আমরা সেগুলো বিবেচনা করবো। এছাড়াও, দুই দেশের মধ্যকার আকাশ পথে যোগাযোগ আরো বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
হাইকমিশনার এ সময় জানান, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে এভিয়েশন এবং পর্যটন খাতের সহযোগিতা দুই দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করবে। এটি দুই দেশের ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই সহযোগিতা কিভাবে আরো বৃদ্ধি করা যায় ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা যায় তা নিয়ে আমরা কাজ করবো।

প্রণয় কুমার ভার্মা আরো বলেন, বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশনে কর্মরত কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে ২০২২- ২৩ অর্থবছরে ভারত ৩৬ জন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ভবিষ্যতেও এটি চলমান থাকবে। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে অনেক ভারতীয় বিনিয়োগকারী বিনিয়োগে আগ্রহী। আমরা তাদের উৎসাহ ও সহযোগিতা প্রদান করছি। পাশাপাশি পর্যটনের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আকাশ পথে নতুন নতুন গন্তব্য চালুর বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। বিশেষ করে বাংলাদেশের সাথে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের রাজ্যগুলোকে আকাশ পথে যুক্ত করার ব্যাপারে ভারত আগ্রহী। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত বছর ১৬ লাখ বাংলাদেশী নাগরিককে ভারতীয় ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। দিন দিন এটির সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশীদের সময়মতো ভিসা প্রদানের জন্য আমরা আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছি। বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য ভারতে অন এ্যারাইভাল ভিসার বিষয়টি ভবিষ্যতে আলোচনা করা হবে।

পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিমান মন্ত্রী জানান, বিমান বর্তমানে লাভজনক ভাবে চলছে। সীমিত সংখ্যক উড়োজাহাজ ও আরো বেশ কিছু সীমাবদ্ধতার মধ্যেও যাত্রী সেবা দিয়ে চলছে। সীমাবদ্ধতা দূর করে এই সেবা কিভাবে আরও উন্নত করা যায় তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। নতুন বিমান কেনা নিয়েও চিন্তা ভাবনা চলছে। বিমানের সমস্যাগুলো ইতোমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তা দূর করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
বিদেশি পর্যটকদের জন্য বাংলাদেশে অন এ্যারাইভাল ভিসা ব্যবস্থার প্রচলন করা হবে কিনা এই প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, বাংলাদেশে আসার ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের পর্যটকেরা যাতে সহজে ও কম সময়ে ভিসা পায় এবং ক্ষেত্রমতে অন এ্যারাইভাল ভিসা পায় তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করা হবে।
হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের জন্য নতুন করে ব্যয় বাড়ানোর প্রয়োজন আছে কিনা তা আলোচনা করা হবে। আপনারা জানেন, তৃতীয় টার্মিনালে অনেক নতুন নতুন বিষয় যুক্ত হচ্ছে। তার জন্য হয়তো ব্যয় কিছুটা বাড়ানোর প্রয়োজনও হতে পারে। তবে যে সিদ্ধান্তই নেয়া হোক দেশের ও জনগণের লাভের কথা চিন্তা করেই নেয়া হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিমানবন্দরে প্রবাসী ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা কাউন্টার স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যেই নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। (বাসস)