ব্যয় বাড়ানোর জন্য প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর অভিযোগ রয়েছে: মন্ত্রী

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘ব্যয় বাড়ানোর জন্য প্রকল্প পরিচালক ও ঠিকাদারদের যোগসাজসে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা নষ্ট ও অর্থের অপচয় হয়। পাশাপাশি মধ্য মেয়াদি বাজেট পরিকল্পনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

সোমবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তা এবং দপ্তর প্রধানদের সাথে উন্নয়ন কার্যক্রম পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, অনেকে প্রকল্পের ধীরগতি বা সময়মতো শেষ না হওয়ার জন্য ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্বের সত্যতা অনেক জায়গায় পাওয়া গেছে। আবার প্রকল্প পরিচালকদের মধ্যেও সমন্বয়ের ঘাটতি দেখা যায়।

এ বিষয়ে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়কের কাজের গুণগত মানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। কাজের মানের বিষয়ে ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা দায় এড়াতে পারবেন না। যারা মনিটরিং করবেন তাদেরও দায় নিতে হবে।

মহাসড়কের সৌন্দর্য বর্ধনের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মহাসড়ক ও সড়কে ফেস্টুন, ব্যানার ঝুলে পড়ছে। মহাসড়ক, সড়কের পাশ ও বিভাজক পরিষ্কার রাখতে হবে। ব্যানার, ফেস্টুন রাখা যাবে না। কেউ বাধা দিলে আমাকে জানান।’

তিনি বলেন, মোগড়াপাড়া, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড, নবীনগর, চন্দ্রাসহ বিভিন্ন স্থানে সিটি করপোরেশন আর পৌরসভার ময়লা ফেলে যাচ্ছে। বিদেশিরাও এসব সড়ক ব্যবহার করেন, তখন তাদের ইমপ্রেশন কেমন হয়!

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা এয়ারপোর্ট সড়কের সৌন্দর্য বর্ধনের বিষয়টি কতবার বলেছি, অর্ধযুগ শেষ হতে চলল, কিন্তু নীতিমালার কাজ শেষ হয়নি। একটি নীতিমালা করতে কত বছর লাগে? এমন একজন দক্ষ কর্মকর্তা কী এ বিভাগে নেই! সচিব সাহেবকে আমি অর্ধডজন বার স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। এ বিষয় নিয়ে আর বলতে চাই না।’

বিআরটিএকে সত্যিকার অর্থে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তৈরি করার কথা বলে মন্ত্রী বলেন, ‘বিআরটিএ’র সব অর্জন এক ড্রাইভিং লাইসেন্সের কারণে আজ প্রশ্নবিদ্ধ। প্রতিদিন শত শত আবেদন আসে। দ্রুত কার্ড সংগ্রহ করুন। প্রথমে অল্প কিছু হলেও সরবরাহ করুন। ব্যাকলক যা আছে তার সমাধান করুন। প্রয়োজনে অতিরিক্ত কাজ করতে হবে। সেবাগুলো অনলাইনে যাওয়ায় সেবা গ্রহণে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ডিজিটাল ফিটনেস পরীক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ করতে বিভাগীয় পর্যায়ে ভিআইসি স্থাপনের উদ্যোগ নিন।’

নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা সরকারের অগ্রাধিকার ও চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের এখনও বড় দুর্ভাবনা। মহাসড়কে ছোট এবং অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে কার্যকর করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আগামী ২২ অক্টোবর নিরাপদ সড়ক দিবসের আগে সারা দেশের সড়ক, মহাসড়কে সাইন-সিগনাল এবং সড়ক নির্দেশনা স্থাপন করতে পারা যায় কি না, এটিও একটি দৃশ্যমান কাজ হতে পারে।’

বিশেষ করে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘গাজীপুরবাসী, উত্তরবঙ্গ ও বৃহত্তর ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা বছরের পর বছর কষ্ট করছেন। সেখানে জনভোগান্তি চরমে। এ মহাসড়ক নিয়ে আমাদের ভিন্ন কিছু ভাবতে হবে। জনগণকে আর কষ্ট দেয়া যায় না। প্রকল্পগুলোর কাজের গতি বাড়াতে হবে। যেসব প্রকল্পের সাথে জনভোগান্তি জড়িত সেগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে শেষ করতে হবে।’