ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে ৪ চ্যালেঞ্জ

১ জুলাই থেকে ভ্যাট আইন বাস্তবায়িত হবে। এ আইন বাস্তবায়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ৪টি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে বলে মনে করছেন ঢাকা পূর্ব ভ্যাট কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামান। তবে তিনি বলেছেন, চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এনবিআর।

রাজধানীর জাতীয় ক্রীড়া ভবনে ঢাকা পূর্ব কমিশনারেটের সোনাইল সম্মেলন কক্ষে প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি সম্প্রতি এ মন্তব্য করেন। ড. নুরুজ্জামান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ আইনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন আইনের আওতায় ১লা জুলাই থেকে ভ্যাট আহরণ কার্যক্রম শুরু হবে। এই নতুন আইন বাস্তবায়নে আমরা ৪টি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি।

চ্যালেঞ্জগুলো হলো- ৩০ জুনের মধ্যে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করা; টার্নওভারের সীমা বাড়ানোর উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা; সকল ভোক্তাকে ক্রয় চালান নিশ্চিত ও ভ্যাট স্মার্ট হিসেবে তৈরি করা।

চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নেওয়া পদক্ষেপের অগ্রগতি নিয়ে কমিশনার বলেন, কমিশনারেটের সদর দপ্তর, ভ্যাট বিভাগীয় দপ্তর, সার্কেল দপ্তরে ভ্যাট হেল্প ডেক্স স্থাপন, কম্পিউটার শাখা ও হেল্প ডেক্স উভয় স্থান থেকে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন প্রদান করা হচ্ছে।

“অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন মেলা, শহর, জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদে মাইকিং এর মাধ্যমে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মোবাইল হেল্প ডেক্সের মাধ্যমে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন প্রদান করা হচ্ছে। প্রত্যেক দপ্তরকে জুন মাসের মধ্যে এ ধরনের আরও একাধিক মেলার আয়োজন করার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”

নতুন ভ্যাট আইনের টার্নওভার সীমা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ঢাকা পূর্ব ভ্যাট কমিশনার বলেন, বার্ষিক টার্নওভার ৩৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ভ্যাটমুক্ত এবং ৩৬ লাখ টাকা থেকে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত ৪% হারে টার্নওভার করের আওতায় রাখা হয়েছে।

এক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে ড. নুরুজ্জামান বলেন, সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভার নির্ধারণ করা, নিবন্ধিত/তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের তালিকা সংগ্রহ করা, যেসব প্রতিষ্ঠান ১৫% ভ্যাট প্রদানের যোগ্য কিন্তু ৪% কর পরিশোধের জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে; যেসব প্রতিষ্ঠান ৪% টার্নওভার কর দেয়ার যোগ্য কিন্তু তাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে কর নেটের বাইরে ঘোষণা করা হয়েছে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।

কমিশনার বলেন, প্রত্যেক ক্রেতা/ভোক্তা হিসেবে দ্রব্য ক্রয়ের সময় কর চালানপত্র সংগ্রহ করতে হবে। ভোক্তাকে ভ্যাট স্মার্ট হতে হবে। প্রত্যেক ভ্যাট স্মার্ট ভোক্তাকে ভ্যাট চালান বুঝে নেয়া ও করের টাকা জমা হয়েছে কি-না তা নিশ্চিত করতে হবে।

“ভ্যাট স্মার্ট হিসেবে সব ভোক্তার মানসিকতা তৈরি করাই হচ্ছে আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।”

ঢাকা পূর্ব ভ্যাট কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামান বলেন, প্রচার-প্রচারণাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শহর এলাকা ছাড়াও জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদে মাইকিং এর মাধ্যমে এর প্রচার চালানো হচ্ছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও সভা সেমিনার করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। একইসঙ্গে মোবাইলে এসএমএস, লিফলেট বিতরণ, টিভি স্ক্রলের মাধ্যমে প্রচারণার কাজ এগিয়ে নিচ্ছে এনবিআর।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/৫জুন ২০১৭