মিরপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলা

মিরপুরে নিরাপদ সড়ক চাইসহ নয় দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তাদের সঙ্গে পুলিশও ছিল বলে জানা যায়।

বৃহস্পতিবার (০২ আগস্ট) বিকালে মিরপুর-১৩ ও ১৪ নম্বরে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ হামলা চালানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ধাওয়াও করেছেন। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকজনকে মারধরও করে পুলিশ সদস্যরা।

ঘটনাস্থল থেকে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র রাজু আহমেদ জানান, আমাদের আন্দোলনে অংশ নেয়া প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে প্রাতিষ্ঠানিক আইডিকার্ড রয়েছে। শান্তিপ্রিয় আন্দোলন চলছিল। কিন্তু বিকেল পৌনে ৫টার দিকে হঠাৎ করেই পুলিশ স্টাফ কলেজের সামনে থেকে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। পেছন থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। ছাত্র-ছাত্রীদের ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে মিরপুর-১০ এলাকায় অবস্থান নেই আমরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করছিলাম। পুলিশ হঠাৎ এসে আমাদের লাঠিপেটা শুরু করেছে। পরে তাদের সঙ্গে স্থানীয় যুবলীগও যোগ দিয়েছে।

তবে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা জানান, যারা আন্দোলন করছে তাদের ভেতর বহিরাগতরা মিশে গেছে। ওই কুচক্রি অংশটিই টার্গেট করে পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালাচ্ছে। যে কারণে আমরা ওই অংশটিকে ধাওয়া করেছি।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার ইয়াসমীন সাইকা পাশা বলেন, শিক্ষার্থীরা কোনো কারণ ছাড়াই কাফরুল থানায় হামলার চেষ্টা করে। পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান ফটক ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। তারা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছোড়ে। পরে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। তখন তারা ১০ নম্বর গোলচত্বরের দিকে যায়।

হামলায় পুলিশের সঙ্গে লাঠি হতে কারা ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।

প্রসঙ্গত, গত রোববার (২৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের চালকের রেষারেষির ফলে একটি বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। একই ঘটনায় আহত হয় ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী।

নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।

এ ঘটনা কেন্দ্র করে পাঁচ দিন ধরে রাজধানীজুড়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তারা দোষী পরিবহনকর্মীদের বিচার ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবি জানাচ্ছেন।

 

আজকের বাজার/এমএইচ