মুক্তি পেলেন নর্থ সাউথের শিক্ষক হাসনাত করিম

দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেলেন গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যোলয়ের শিক্ষক হাসনাত রেজা করিম।

বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) বিকাল সাড়ে চারটার সময় গাজীপুরের কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি জেল থেকে মুক্তি পান ব্রিটেন ও বাংলাদেশের এই দ্বৈত নাগরিক। এসময় সেখানে তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

২০১৬ সালের ১ জুলাই দেশ কাঁপানো এই হামলার সময় হাসনাত করিম এবং তার পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয়। ওই হামলার সময় পাশ্ববর্তী একটি বাড়ি থেকে এক বিদেশি নাগরিকের করা ভিডিওচিত্রে হামলার পরদিন ভোরে রেস্তোরাঁর ছাদে হাসনাত করিমের সঙ্গে হামলাকারী একাধিক তরুণকে দেখা যায়। পাশের ভবন থেকে কোরিয়ান সেই নাগরিকের ধারণ করা ভিডিওতে মনে হয়েছে তারা সেখানে আলোচনা করছেন।

এরপরই ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পরদিন থেকেই সন্দেহভাজন হিসেবে প্রথমে আটক ও পরবর্তীতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন হাসনাত করিম।

বহুল আলোচিত ওই জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। এ সময় তাদের গুলিতে দুই পুলিশ সদস্যও নিহত হন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করে পুলিশ।

হাসনাত করিম এই হামলায় জড়িত বলে সে সময় ধারণা করা হয়। আবার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার সময় উগ্রপন্থী ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা এবং এই সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগ আছে হাসনাতের বিরুদ্ধে।

জঙ্গি হামলার পর সেনা অভিযানে উদ্ধার জঙ্গিদের মধ্যে ‘রহস্যজনক’আচরণের কারণে হাসনাত করিমকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেওয়া হয়। ঘটনার কয়েকদিন পর হাসনাতকে ছেড়ে দেওয়ার কথা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হলেও তাকে আর ছাড়া হয়নি।

এরপর তাকে ওই বছরের ৩ আগস্ট রাজধানীর একটি বাড়ি থেকে গুলশান হামলার সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৪ আগস্ট প্রথম দফায় তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রিমান্ড শেষে ১৩ আগস্ট হলি আর্টিজান মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেদিনই আরও আট দিন রিমান্ডে নেয়া হয় হাসনাত করিমকে। দুই দফা ১৬ দিনের রিমান্ড শেষে ২৪ আগস্ট তাকে আদালতে নেয়া হলে তার জামিন আবেদন নাকচ করে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর থেকে তিনি কাশিমপুর কারাগারে বন্দি ছিলেন।

আজকের বাজার/এমএইচ