রোহিঙ্গাদের ফেরা দ্রুত হবে না: এইচটি ইমাম

মিয়ানমারের রাখাইন থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৭ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর নিজে দেশে ফেরা খুব শিগগিরই হচ্ছে না বলে স্বীকার করেছেন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলছেন, বাংলাদেশে এসব শরণার্থীর দীর্ঘমেয়াদী অবস্থানের কথা বিবেচনা করে সরকার এখন এদের বাসস্থান এবং ভরণপোষণের জন্য তৈরি হচ্ছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট দীর্ঘায়িত হতে পারে, এমন আশংকায় জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো প্রায় ১০০ কোটি ডলারের সাহায্যের আবেদন জানাতে যাচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে এইচটি ইমাম জানান, রোহিঙ্গাদের নিয়ে জাতিসংঘের পরিকল্পনাটির একটি খসড়া সরকারকে দেখানো হয়েছে এবং এতে মোটামুটিভাবে সরকারের সায় রয়েছে।

‘নিশ্চই তারা মনে করছে (পুরো প্রক্রিয়াটি) আরও দীর্ঘায়িত হবে, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে আমারও তাই মনে হয়। পররাষ্ট্র সচিবও সেটি আমাকে জানিয়েছেন।

ইমাম ব্যাখ্যা করেন, মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় যেভাবে কাঁটাতারের বেড়া, পরিখা ইত্যাদি নির্মাণ করছে তাতে তাদের মনে হচ্ছে মিয়ানমার শরণার্থীদের দেশে ফেরত যাওয়ার পথগুলো বন্ধ করে দিতে চাইছে। এগুলো আমি আক্রমণাত্মক পদক্ষেপই বলবো।

তিনি বলেন, মনে হচ্ছে এতে অন্য কারো ইন্ধন রয়েছে, যাতে তারা (মিয়ানমার) আরো বেশি উৎসাহিত হয়ে উঠছে। তাহলে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেয়ার প্রশ্নে সরকারের চিন্তাভাবনা কী হবে এই বিষয়ে এইচটি ইমাম জানান, বাংলাদেশ বিষয়টিকে আর আন্তর্জাতিকীকরণ করতে চাইছে না। তারা প্রতিকারের জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের দ্বারস্থ হতে চাইছে না।

‘এর আগে আমরা চারবার নিরাপত্তা পরিষদে গেছি। প্রায় সব দেশই আমাদের সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু চীন প্রতিবারই আমাদের বাধা দিয়েছে।’

বাংলাদেশ মিয়ানমারের সাথে দ্বিপাক্ষিকভাবে সমস্যা সমাধানের আলোচনা করতে চায় এবং এই কাজে চীনের সমর্থন নেয়ার চেষ্টা করবে বলে তিনি জানান।

রোহিঙ্গা সঙ্কট যে দীর্ঘায়িত হতে পারে এধরনের একটি আশঙ্কা আগেই করেছেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। সে কথা মাথায় রেখেই তিনি সম্প্রতি বলেছেন যে রোহিঙ্গাদের জন্য আগামী বাজেটি অর্থ সংস্থান করা হবে।

বাজেট বরাদ্দের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমামও উল্লেখ করেন। তিনি জানান, শরণার্থীদের একাংশকে ভাসান চরে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া পুরো উদ্যমে চলছে। সার্বিকভাবে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে।

দ্বীপ সংরক্ষণ, মাটি ভরাট ইত্যাদির কাজ একটি ব্রিটিশ এবং একটি চীনা প্রতিষ্ঠান করছে বলে জানান তিনি। এইচটি ইমাম বলেন, জোয়ারের সময় দ্বীপটি যাতে জলমগ্ন না হয় তার জন্যই এই দুটি প্রতিষ্ঠান সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ করছে।

আজকেরবাজার/এসকে