শুভ জম্মদিন মাহমুদউল্লাহ বিয়াদ

হতাশাময় ২০১৪ কাটিয়ে ২০১৫ থেকে যে সাফল্যমণ্ডিত যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের, যে যাত্রায় বড় ভূমিকা ছিলো জাতীয় দলের পঞ্চপাণ্ডবের। আর এ পঞ্চপাণ্ডবের অন্যতম সদস্য অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাকি চারজনের (মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহীম) মতো অত বেশি আলোচিত না হলেও, নীরবেই নিজের কাজটা করে থাকেন মাহমুদউল্লাহ।

দলের সংকটময় মুহূর্ত কিংবা ওপরের সারির ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাদের দিনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে যান এ মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান। প্রায় ১ যুগের ক্যারিয়ারে অসংখ্যবার বাংলাদেশ দলকে বিপদের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন তিনি। যে কারণে ভক্ত-সমর্থক থেকে শুরু করে ক্রিকেটপাড়ায় তাকে ডাকা হয় ‘বিপদের বন্ধু’ নামে।

শুধু ক্রিকেটার হিসেবেই নয়, ব্যক্তি খেলোয়াড় হিসেবেও অসাধারণ চরিত্রের অধিকারী মাহমুদউল্লাহ। ক্রিকেট যদি হয় ভদ্রলোকের খেলা, তবে তিনি যেন তার যোগ্য বিজ্ঞাপন। ভদ্রলোক বলতে যা বোঝায়, তিনি ঠিক তাই। মাঠ কিংবা মাঠের বাইরে নম্রভদ্র স্বভাবের জন্য বিশেষ পরিচিত তিনি।

আজ থেকে ঠিক ৩৪ বছর আগে, ১৯৮৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে ময়মনসিংহের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিন দশকের বেশি সময় পেরিয়ে তিনি আজ পা রাখলেন ৩৪ বছরে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে জাগোনিউজের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

ক্রিকেটের মানুষ মাহমুদউল্লাহ, আজ (মঙ্গলবার) নিজের জন্মদিনেও ব্যস্ত থাকবেন ক্রিকেটের কাজেই। তবে মাঠের খেলায় নয়, পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট খেলার উদ্দেশ্যে আজ সন্ধ্যায় জাতীয় দলের সঙ্গে দেশ ছাড়বেন তিনিও। মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান না থাকায়, এ টেস্টেও গুরুদায়িত্ব থাকবে মাহমুদউল্লাহর কাঁধে।

২০০৭ সালের জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছেন মাহমুদউল্লাহ। এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ৪৮ টেস্ট, ১৮৫ ওয়ানডে এবং ৮৫ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ব্যাট হাতে টেস্টে ৪ সেঞ্চুরিতে ২৭৩৯, ওয়ানডেতে ৩ সেঞ্চুরিতে ৩৯৯৪ ও টি-টোয়েন্টিতে ৪ ফিফটিতে ১৪৬১ রান করেছেন তিনি।

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতি অফস্পিনটাও বেশ ভালোই করে থাকেন মাহমুদউল্লাহ। টেস্টে ৪৩, ওয়ানডেতে ৭৬ ও টি-টোয়েন্টিতে তার ঝুলিতে রয়েছে ৩১ উইকেট। নিজের টেস্ট অভিষেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ।

অভিজ্ঞ এ খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারে উল্লেখযোগ্য স্মৃতি তুলে ধরতে বলা হলে, সবার আগে আসবে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ, ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ও ২০১৭ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শফিউল ইসলামকে নিয়ে তার ম্যাচ জেতানোর স্মৃতি এখনও যেকোনো টাইগার ভক্তের স্মৃতিতে উজ্জ্বল।

এরপর ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে গড়েন ইতিহাস। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি ও পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন মাহমুদউল্লাহ। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব আল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ২২৪ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন তিনি, নিজে খেলেন ১০২ রানের ইনিংস। সে ম্যাচে দুর্দান্ত কামব্যাক করে দলকে জয় এনে দেন মাহমুদউল্লাহ।

এছাড়া জাতীয় দলের হয়ে আরও অনেক মুহূর্ত রয়েছে তার। যেমন ২০১৮ সালের নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে জয় কিংবা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৮ নম্বরে নেমে টেস্ট সেঞ্চুরি।

আজকের বাজার/আরিফ