সিরিয়ার পাতাল হাসপাতালে বিমান হামলা

সিরিয়ার হামা প্রদেশের পাতাল হাসপাতাল ‘আল মেঘারা কেভে’ বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার হাসপাতালটিতে পাঁচটি মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনায় এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালটি সিরিয়ার কেন্দ্রে কাফার জিতা শহরের প্রায় ৬০ ফুট নিচে অবস্থিত। এটিকে সিরিয়ার সবচেয়ে সুরক্ষিত হাসপাতাল হিসেবে বিবেচনা করা হতো। সাহায্যকর্মীরা জানান, সিরিয়ার হাসপাতালে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান হামলার ঘটনা।

জানা যায়, হাসপাতালটি ৫০ হাজার মানুষকে সেবা দিয়ে থাকে। এ ছাড়া প্রতি মাসে দেড়শ বড় ধরনের অস্ত্রোপচারও করা হয় এই হাসপাতালে। তবে হামলার পর ভবনটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

দি ইউনিয়ন অব মেডিকেল কেয়ার অ্যান্ড রিলিফ অর্গানাইজেশন (ইউওএসএসএম) জানায়, এত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করা একমাত্র বাঙ্কার ব্লাস্টার মিসাইলের মতো অত্যাধুনিক অস্ত্রের মাধ্যমেই সম্ভব। সংস্থাটি আরো জানায়, শুধু জানুয়ারিতেই সিরিয়ার প্রায় ১৪টি হাসপাতালে হামলা চালানো হয়।

এরই মধ্যে এমন দুর্গম এলাকায় সাহায্য পৌঁছাচ্ছে না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক দাতব্য চিকিৎসা জোট ইউওএসএসএমের মুখপাত্র অভি ডি’সৌজা বিবিসিকে জানান, হাসপাতালটিকে সবচেয়ে নিরাপদ মনে করা হতো। এখানেই বৃহস্পতিবার পাঁচটি মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়।

এত বড় একটি হামলার ঘটনায় কোনো মৃতের খবর কেন পাওয়া যাচ্ছে না, তার কারণও জানান ডি’সৌজা। হাসপাতালের আশপাশে বিমানের শব্দ শোনামাত্রই কর্মকর্তা ও রোগীরা একটা নিরাপদ কক্ষে চলে গিয়েছিলেন বলে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি।

গতকালকের হামলা কারা করেছে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে সিরিয়ার যুদ্ধবিমান ও তাদের মিত্র রাশিয়া উভয়েই দেশটির বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে হামলা করার পরিকল্পনা করছিল বলে জানা যায়। তবে নাগরিকদের ওপর এ ধরনের হামলার ব্যাপারে দুই দেশই অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

এদিকে, হামলার দিনই দেশটিতে সাহায্যপ্রাপ্তির কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে কাপুরুষোচিত বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সমন্বয়ক জেন এজেল্যান্ড জানান, এই এলাকায় গত নভেম্বরে সর্বশেষ হামলাটি হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা এই যুদ্ধের একটা শেষ চাই। ২০১৫ সাল থেকে এ পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে।’

এজেল্যান্ড জানান, সাহায্যদাতারা অবশ্যই সিরিয়ান সরকারের অনুমোদিত হতে হবে। এ ছাড়া সামরিক বাহিনীকে অবশ্যই নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে হবে।