সীমান্তে আবারো সেনা বাড়ালো মিয়ানমার

সীমান্তে অস্ত্রসহ আরো তিন পিকআপ সেনা মোতায়েন করেছে মিয়ানমার। গতকাল বিজিবি-বিজিপি পতাকা বৈঠকের পর সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হলেও আজ আবার সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে দেশটি। এ নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

সূত্র জানায়, শনিবার সকালে মিয়ানমার বাহিনী তমব্রু সীমান্তে নতুন করে আরো তিন পিকআপভ্যান সেনা পাঠিয়েছে। ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সীমান্তের তুমব্রু পয়েন্টে সেনা-বিজিপি সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।

এদিকে ঘুমধুম তুমব্রু সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে নতুন করে জনবলশক্তি বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবিও।

এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে শূন্যরেখায় আশ্রয় নেয়া প্রায় ছয় হাজার রোহিঙ্গা।

শুক্রবার (২ মার্চ) রাত থেকে মিয়ানমারের সেনা-বিজিপি দফায় দফায় মাইকিং করে নোম্যান্সল্যান্ডের কোনাপাড়া আশ্রয় ক্যাম্প ছেড়ে রোহিঙ্গাদের চলে যেতে বলা হচ্ছে।

প্রতিদিনের মত গতরাতেও মদের খালি বোতল ছুড়ে মেরেছে বিজিপি সদস্যরা। বিষয়টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা দলনেতা নূর হোসেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিজিবি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও।

বিজিবি ৩৪ ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান জানান, মিয়ানমারের নিরাপত্তার প্রয়োজনে সীমান্তের ওপারে সেনা-বিজিপি সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। তবে সীমান্তে টহল সেনা-বিজিপির রুটিন প্রশিক্ষণের একটি অংশ বলে দাবি করেছে মিয়ানমার।

সীমান্ত সুরক্ষায় সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং পর্যবেক্ষণের জন্য তুমব্রু সীমান্তে বিজিবির জনবলশক্তি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-ইউএনও সরওয়ার কামাল জানান, ঘুমধুম তুমব্রু সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে মিয়ানমারের সেনা-বিজিপি ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিয়েছে।

তিনি আরো জানান, সীমান্তের এপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি কঠোর নিরাপত্তাবলয় তৈরি করেছে। সীমান্তের দুপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের কারণে তুমব্রু সীমান্তে অনেকটা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

শূন্যরেখায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে সরকারের পক্ষ থেকে চাপ দেয়া হচ্ছে বলে জানান ইউএনও সরওয়ার কামাল।

প্রসঙ্গত, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের কোনাক খালের ওপারে শূন্যরেখায় অবস্থান করছে প্রায় ৬ হাজার রোহিঙ্গা।

আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ভয়ভীতি দেখাতে এবং মিয়ানমারের ফেরার পথ অবরুদ্ধ করতে গত বুধবার থেকে মিয়ানমার সীমান্ত সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ১৩ পিকআপ ভ্যান সেনা-বিজিপি ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছে।

পিকআপ এবং মোটরসাইকেল করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টহল দিচ্ছে মিয়ানমার সেনারা।

এমআর/