হাথুরুসিংহ, প্রসংগটাই বোকামি : সুজন

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হার দিয় শুরু হয় হাথুরুসিংহের মিশন। আর টাইগাররা সাবেক গুরুর নতুন দলের বিপক্ষে প্রথম দেখাতেই জিতেছে রেকর্ড গড়ে। শুক্রবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টাইগারদের ১৬৩ রানের জয়টা রানের হিসেবে নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আর স্বাগতিক দলের অঘোষিত প্রধান কোচের ভূমিকায় যে মানুষটি সেই খালেদ মাহমুদ সুজন বলছেন, ‘হাথুরুসিংহেকে নিয়ে আলোচনাটাই বোকামি।’

বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এমনকি হাথুরুসিংহে নিজেও যতোই বলুন লড়াইটা ‘বাংলাদেশ বনাম হাথুরু’ নয়; কিন্তু সেই কথা কি আর সাধারণ ভক্ত-সমর্থকদের আবেগ মানাতে পারে? তাই শুক্রবারের বিজয়ে ব্যক্তি হাথুরুসিংহের বিপক্ষে একটা অদৃশ্য বিজয়ও ধরে নেন দর্শকরা। পত্রিকার পাতা, অন লাইন নিউজপেপার বা টিভি চ্যানেলের প্রায় সব রিপোর্টে কোনো না কোনো ভাবে ‘হাথুরু’ চলে আসছে নিয়মিত। যে সিরিজের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষ হাথুরুসিংহেকে নিয়ে এতো আলোচনা সেটির বুঝি শেষ টানার সময় এসে গেছে। লিগ পর্বেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আরেকবার খেলবে তাদেরই হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলা বাংলাদেশ। তবে শ্রীলঙ্কাকে সিরিজে প্রথম দেখাতে এতো বড় ব্যবধানে হারানোর পর ‘প্রতিপক্ষ হাথুসিংহে’ প্রসঙ্গ এবার একটু ঢাকা কি পড়তে পারে না?

শনিবার সরাসরি প্রশ্নটা শুনতে হলো সিরিজে বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা খালেদ মাহমুদ সুজনকে। যার উত্তরে যাবার আগে তিনি সরাসরি বলে দিলেন, এই প্রসঙ্গটাই বোকামি।

বেচারা হাথুরুসিংহে! উদ্ভুত পরিস্থিতি কি এমটাই বলে না? শনিবার মিরপুরে সুজনের কথাতেও যেন সেই বার্তাই থাকে মিশে, ‘আমি আসলে হাথুরুসিংহের ব্যাপারটাই আনতে চাই নাই বাংলাদেশ দলের মধ্যে। আমি মনে করি, যে চলে গেছে তাকে নিয়ে আলাপ করাটাই বোকামি। কারণ তিনি পেশাদার। তিনি তার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। (শ্রীলঙ্কার) দায়িত্ব নেওয়ার পর হয়তো তার প্রথম অ্যাসাইনমেন্টটা বাংলাদেশে পড়েছে। তাই কথা বেশি হয়েছে। কিন্তু আমাদের মাথায় কেবল দল কিভাবে আরও সামনে যাবে সেই চিন্তাই ছিল। আমরা যাতে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, আমরা আমাদের শক্তি ও দূর্বলতা নিয়ে অনেক কাজ করেছি।’

আর সুজনের সেই শক্তি দুর্বলতা নিয়ে কাজের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হাথুরুসিংহে প্রসঙ্গও ঢুকে যায়, ‘আমি আগেও বলেছি, আমাদের ফাস্ট বোলিং নিয়ে আমরা অনেক কাজ করেছি। আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটাররা গত কয়েক বছর ধরে টানা পারফর্ম করে যাচ্ছে। আমাদের তরুণ ক্রিকেটাররাও যদি সিনিয়রদের সাথে মিলে পারফর্ম করা শুরু করে, তাহলে আমার মনে হয়, আমরা একটা সময় অপরাজেয় হতে পারবো। তো ওইটাই আসল, চন্ডিকার ব্যাপারটা আমাদের মাথায় আসেনি খুব একটা।’

হাথুরুসিংহেকে নিয়ে না ভেবে নিজেদের পরিকল্পনা মাঠে সঠিক অনুবাদ করে এসেছে সাফল্য। জিম্বাবুয়েকে হারানো গেছে ৮ উইকেটে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধ জয় এসেছে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের জয়ের রেকর্ড গড়ে। সুজন তাই নিজেদের ভাগ্যবান বলেও মানেন একইসঙ্গে। কিন্তু সবাই তো জানে, ভাগ্য তখনই সাথে থাকে, যখন চেষ্টায় থাকে না ত্রুটি। সুজনের অভিভাবকত্বে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল তো আগের ধারাবাহিকতাতে আরো পরিশ্রমে ভিন্ন উচ্চতায় তুলে নেওয়ার চেষ্টাতেই আছেন।

আজকের বাজার: সালি / ২০ জানুয়ারি ২০১৮