১৭ হাজার সরকারি আমলা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতের ঘোষণা মাহাথিরের

মালয়েশিয়ায় সদ্য গঠিত মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের বেতন ১০ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দিলেন আধুনিক মালেশিয়ার জনক হিসেবে পরিচিত দেশটির সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। এছাড়াও রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ১৭ হাজার সরকারি আমলা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির নব নির্বাচিত এই প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার পুত্রজায়ায় তার মন্ত্রিপরিষদের প্রথম বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি। খবর চ্যানেল নিউজ এশিয়া, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট ও ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের।

সংবাদ সম্মেলনে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, আমরা দেশের অর্থনৈতিক সমস্যার দিকে মনযোগ দিচ্ছি। সরকারি ঋণ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে নতুন সরকার এ ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান ঋণের পরিমাণ এক ট্রিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (২৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) ছাড়িয়ে গেছে। এই অর্থ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৬৫ শতাংশ।

সরকারি কর্মচারীদের ব্যাপারে মাহাথির বলেন, আগের সরকারের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় যারা নিয়োগ পেয়েছেন এমন ১৭ হাজার আমলা-কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হবে। তিনি বলেন, ‘সরকারি জনশক্তিতে চুক্তিভিক্তিক কর্মচারীর সংখ্যা অতিরিক্ত হয়ে গেছে। তবে সরকারি গাড়িচালকদের মতো কর্মচারীদের ছাড় দেয়া হবে।’ তবে যাদের ছাঁটাই করা হবে, তাদের একটি অংশকে যোগ্যতা অনুযায়ী অন্য কাজে নিযুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

মন্ত্রীদের বেতনের ব্যাপারে মাহাথির বলেন, মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের বেতন এখন থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে দেয়া হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা যে দেশের আর্থিক সমস্যাকে গুর“ত্ব দিয়ে দেখছি, এ পদক্ষেপে সেটা প্রমাণিত হবে।

মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, দেশটিতে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বেতন ২২ হাজার ৮২৭ রিঙ্গিত, উপ-প্রধানমন্ত্রীর ১৮ হাজার ১৬৮ রিঙ্গিত, মন্ত্রীর ১৫৯০৭ রিঙ্গিত ও উপ-মন্ত্রীর ১০৮৪৮ রিঙ্গিত।

তবে দেশটির উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন কাট-ছাঁট করা হবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ১৯৮১ সালে আমি যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন প্রথম কাজ হিসেবে মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ আমলাদের বেতন কাট-ছাঁট করেছিলাম।

তিনি বলেন, মন্ত্রীদের চেয়ে জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তারা বেতন বেশি পান। দেশ পরিচালনার জন্য তারা যদি অবদান রাখতে চান তাহলে বেতন কাট-ছাঁটের ব্যাপারটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তারা এটি করতে পারে। কিন্তু আমরা তাদের বাধ্য করবো না।

আজকের বাজার/ এমএইচ