২০১৭ সালে ব্যাট হাতে সফল যারা

বিগত বছরগুলোর মতো ২০১৭ সাল ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য ছিল স্বস্তিদায়ক। ক্রিকেটীয় দাপট অব্যাহত রেখে এই বছর বাংলাদেশ জায়গা করে নেয় আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় আসরের সেমিফাইনালে। বছরজুড়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দল-বধের বিরত্বগাঁথার কাহিনি।

যদিও বছরের শেষদিকে এসে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। তবে তাতেও ম্লান হচ্ছে না আগের সফলতাগুলো। বাংলাদেশের এই সফলতার পেছনে অন্যতম বড় অবদান ছিল ব্যাটসম্যানদের, যা আদায় করে নিয়েছে ক্রিকেট বিশ্বের সমীহ। ওয়ানডেতে বজায় ছিল বিগত বছরগুলোর দাপট। টেস্টেও এ বছর বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট। যদিও টি-২০ তে দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে এখনও সক্ষম হয়নি টাইগাররা। আর এর অন্যতম বড় কারণ এই ফরম্যাটে কম ম্যাচ খেলা।

ওয়ানডে এবং টেস্টে বাংলাদেশের এই বছরের সফলতার পেছনে মূল জ্বালানী ছিল ব্যাটিং। অভিজ্ঞ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে গত বছরও বাংলাদেশ ভুগিয়েছে প্রতিপক্ষ বোলারদের, যা অব্যাহত থাকে ২০১৭ সালে এসেও। একদম শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের কথা বাদ দিলে পুরো বছরই বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ছিল প্রতিপক্ষের কাছে সমীহ জাগানিয়া। আর সেই সমীহ জাগানিয়া ব্যাটিং থেকেই বজায় থেকেছে ক্রিকেটের পুরনো দুই ফরম্যাটে মাশরাফি-সাকিব-তামিমদের সাফল্যের ধারা।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, এই বছর বিভিন্ন ফরম্যাটে কারা আছেন সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রাহকের তালিকায়।

টেস্ট
বছরজুড়ে আলোচনায় ছিলেন টেস্ট দলের সদ্য ‘সাবেক’ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। শেষদিকে এসে খুইয়েছেন অধিনায়কত্বও। তবে ক্রিকেটীয় বিচারে টেস্টে মুশফিকই এই বছরের সেরা ব্যাটসম্যান। ৮ ম্যাচের ১৬ ইনিংসে ব্যাট করে এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের রান ৭৬৬, যেখানে আছে দুটি সেঞ্চুরি ও তিনটি হাফ-সেঞ্চুরি। ৫৪.৭১ ব্যাটিং গড় নিয়ে মুশফিকই ২০১৭ সালে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান।

মুশফিকের পরের স্থানেই আছেন সাকিব আল হাসান। সাত টেস্টের সবগুলো ইনিংসে ব্যাট করে তার সংগ্রহ ৬৬৫ রান। মুশফিকের মতো তিনিও হাঁকিয়েছেন দুটি শতক ও তিনটি অর্ধ-শতক। তার ব্যাটিং গড় ৪৭.৫০। ভালো পারফরমেন্সের পুরষ্কার হিসেবে বছরের শেষে মুশফিকের হাত থেকে নেতৃত্ব এসেছে সাকিবের হাতেই।

বাংলাদেশের ক্রিকেটের রাজসিক উত্থানের পেছনে মুশফিক ও সাকিবের সাথে যার নাম উচ্চারিত হতে পারে, সেই তামিম ইকবাল আছেন তৃতীয় স্থানে। ৮ ম্যাচের ১৬ ইনিংসে তার সংগ্রহে ৫৩৭ রান, যেখানে রয়েছে পাঁচটি হাফ-সেঞ্চুরি। যদিও এই বছর টেস্টে কোনো সেঞ্চুরি নেই খেলোয়াড়ি খান পরিবারের ছোট ছেলের। তাতেও অবশ্য কমছে না ব্যাটিং গড়। ৫২.৬৯ গড় নিয়ে জানান দিচ্ছেন নিজের সামর্থ্যই।

ওয়ানডে
একদিনের ক্রিকেটে এই বছর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তামিম ইকবাল। ১২ ম্যাচের ১১ ইনিংসে ব্যাট হাতে ক্রিজে নেমে করেছেন ৬৪৬ রান। ৬৪.৬০ ব্যাটিং গড়ের পাশাপাশি জ্বলজ্বল করছে দুটি শতক ও চারটি অর্ধ-শতক।

তামিমের পরের স্থানে আছেন মুশফিকুর রহিম। ১৪ ম্যাচের ১৩ ইনিংসে ব্যাট করে তার রান ৪৫৮। রয়েছে একটি শতক ও চারটি অর্ধ-শতক। ব্যাটিং গড় ৪৫.৮০।

সাকিব আল হাসান এই ফরম্যাটেও বছরের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। একটি সেঞ্চুরি ও তিনটি হাফ-সেঞ্চুরি নিয়ে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের ব্যাটিং গড় ৩৫.৮৩।

টি-২০
টি-২০ তে অন্যান্য দলের চেয়ে কম ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তাতে ৭ ম্যাচের ৭ ইনিংসে ২৩৫ রান করা বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য সরকার বছরের সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রাহক। এই রান করতে কোনো হাফ-সেঞ্চুরির মাইলফলকও ছুঁতে পারেননি সৌম্য। ব্যাটিং গড় ৩৩.৫৭।

ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মাহমুদউল্লাহ্ রিয়াদ। ৭ ম্যাচ খেলে এক ফিফটিতে তার রান ১৫১। ব্যাটিং গড় ২৫.১৬।

আলোচিত ক্রিকেটার সাব্বির রহমান আছেন তৃতীয় স্থানে। ৭ ম্যাচে তার রান ১৪১। ২০.১৪ গড়ে এই রান করা ক্রিকেটারের বছরের সর্বোচ্চ স্কোর ৪৮।
আজকের বাজার: সালি / ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭