ঢাকা আসছেন চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশে আসছেন চীন, জাপান, জার্মানি ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। মায়ানমারে অনুষ্ঠেয় এশিয়া-ইউরোপ (আসেম) বৈঠকে যোগ দেয়ার পথে তারা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন। চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের সময়ে মার্কিন কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দলও বাংলাদেশে আসবে। এর অব্যবহিত পরে কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রীও বাংলাদেশে আসছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো, জার্মানির জিগমার গ্যাব্রিয়েল ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগোট ওয়ালস্ট্রম ২০ ও ২১ নভেম্বর আসেম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ১৩তম বৈঠকে যোগ দেবেন। মায়ানমারের রাজধানী নেপিদোয় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে যাওয়ার আগে ১৮ ও ১৯ নভেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পৃথক সফরে বাংলাদেশ আসবেন। বাংলাদেশে তারা রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন। ১৮ ও ১৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দলও ঢাকা আসছে। এ সফরগুলোর মাধ্যমে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ঢাকার পক্ষে শক্তিশালী অবস্থান প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মনে করছেন বাংলাদেশের কূটনীতিকরা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আগামী ১৮ ও ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশে চীন, জাপান, জার্মানি ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আসছেন। মায়ানমারে আসেম সম্মেলনে যোগ দেয়ার আগে তারা বাংলাদেশ ঘুরে যাবেন। মূলত রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতেই তারা আসছেন।’
জানা গেছে, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ১৮ নভেম্বর শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। পরদিন রোববার জাপান ও জার্মানির সফররত মন্ত্রীদের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের কথা রয়েছে। আবুল হাসান মাহমুদ আলী এদিন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে নিয়ে যাবেন। এছাড়া সুইডিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালস্ট্রমের আসন্ন সফরের বিষয়ে দেশটির ঢাকাস্থ মিশনকে এখনো কোনো তথ্য জানানো হয়নি বলে সেখানকার এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে জানিয়েছেন।
এদিকে কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও ফরাসি ভাষাভাষি অঞ্চলবিষয়ক মন্ত্রী মারি-ক্লদ বিবো ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ সফরে আসছেন। ২২ নভেম্বর তিনি রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে কক্সবাজার যাবেন। ২৩ নভেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে।
জানা গেছে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মায়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে এবার জাতিসংঘ থার্ড কমিটির শক্তিশালী অবস্থান চায় ঢাকা। নিরাপত্তা পরিষদের পর এবার জাতিসংঘের থার্ড কমিটিতে ১৪-১৬ নভেম্বর রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হবে। এ আলোচনার উদ্যোক্তা ওআইসি। তবে এরই মধ্যে রাখাইন ইস্যুতে থার্ড কমিটিতে একটি রেজল্যুশনের প্রস্তাব করেছে মিসর। ১৬ নভেম্বর সে প্রস্তাবনার বিষয়ে ভোটাভুটি হবে। এর আগে আগামীকালের মধ্যে আগ্রহী দেশগুলোকে এ প্রস্তাবনায় সমর্থন জানাতে হবে। বাংলাদেশ এরই মধ্যে প্রস্তাবনার পক্ষে জনমত গঠনের কাজে নেমেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, থার্ড কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবনার পক্ষে ভোট দিতে এরই মধ্যে বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্রগুলোর আনুষ্ঠানিক সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ।
পৃথক খবরে জানা গেছে, রোহিঙ্গা সংকটে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়, নাগরিকদের বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত করাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ আমলে নিয়ে জাতিসংঘ একটি প্রতিনিধি দল কক্সবাজার সফর শুরু করেছে। প্রতিনিধি দলটি মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও নিরাপত্তা পরিষদের কাছে তাদের মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন জমা দেবে।
আজকের বাজার : সালি / ১৫ নভেম্বর ২০১৭