বাজেট বাস্তবায়ন বাড়াতে প্রশাসনিক সংস্কার প্রয়োজন

বাজেট বাস্তবায়নের হার বাড়াতে প্রশাসনিক সংস্কার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম।

৭ জুন বুধবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার মিলনায়তনে ব্র্যাক ও ইনস্টিটিউট ফর ইনফরমেটিক্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইআইডি) আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০১৭-১৮: প্রত্যাশা, প্রাপ্তি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, একদিকে আমাদের বাজেটের আকার বাড়ছে, অন্যদিকে বাস্তবায়নের মাত্রা আনুপাতিক হারে প্রত্যেক বছর কমছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে বাজেটের ৯৩ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছিল।২০১৫- ১৬ অর্থবছরে তা ৭৮ শতাংশে এসেছে। চলতি অর্থবছরে এ হার আরও কমবে।

তিনি বলেন, এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে প্রশাসনিক দক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য প্রশাসনিক সংস্কার প্রয়োজন। প্রশাসনিক সংস্কার ছাড়াও বাজেট বাস্তবায়নে কর্মকর্তাদের প্রণোদনার ব্যবস্থা ব্যবস্থা করতে হবে।

এ অর্থনীতিবিদ বলেন, অবকাঠামো খাতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ (পিপিপি) যথেষ্ট সফলতা পেয়েছে । প্রতিবেশি দেশ ভারতেও পিপিপি বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু আমাদের দেশে এ খাতে অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। প্রত্যেক বছর পিপিপিতে বরাদ্দ রাখা হলেও তা খরচ হয় না। প্রধানমন্ত্রী সরাসরি তত্ত্বাবধান করলেও এ খাতের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়।

প্রকল্প ব্যয় বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিতর্ক আছে। প্রত্যেকটি প্রকল্পের যে সময় নির্ধারণ করা থাকে, তা নির্ধারিত সময়ে শেষ হয় না। যে প্রকল্পের জন্য ৩ বছর সময় ধরা হয়, তা শেষ হতে ৫ থেকে ৬ বছর লেগে যায়। এতে ব্যয়ের পরিমাণও বেড়ে যায়।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল বায়েস। ইনস্টিটিটিউট ফর ইনফরমেটিক্স অ্যান্ড ও ডেভেলপমেন্ট এর প্রধান নির্বাহী সাঈদ আহমেদ।

এ সময় অধ্যাপক বায়েস বাজেটের উপর কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট যতটা প্রবৃদ্ধিমূখী ততটা উন্নয়নমূখী নয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে আরও বেশি বরাদ্দ প্রয়োজন। শিক্ষায় জিডিপির ২ দশমিক ২ শতাংশ বরাদ্দ হয়েছে। তা বৃদ্ধি করে সর্বনিম্ন ৪ শতাংশ করা উচিত। ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমানো, ব্যাংকে গচ্ছিত আমানতের উপর আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার করা, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ এবং সামাজিক অবকাঠামো ক্ষেত্রে পাবলিক-এনজিও পার্টনারশিপের মাধ্যমে কাজ করার প্রস্তাব করেন তিনি।

স্ট্র্যাটেজি, কমিউনিকেশনস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্টের উর্ধ্বতন পরিচালক আসিফ সালেহ’র সভাপতিত্বে সভায় প্যানেল আলোচক হিসেবে আরও সভায় অংশ নেন ব্র্যাকের মাইক্রোফিন্যান্স ও টিইউপি কর্মসূচির পরিচালক শামেরান আবেদ, ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির পরিচালক ড. শফিকুল ইসলাম, ব্র্যাকের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মসূচির প্রোগ্রাম হেড মো. আরিফুল আলম।

আজকের বাজার : এলকে /এলকে ৭ জুন ২০১৭