দেশের প্রয়োজনে কাজ করে সেনাবাহিনী

দেশের যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনী বিশেষভাবে কাজ করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সজাগ ও সদা প্রস্তুত থাকার পাশাপাশি জনগণের সুখ-দুঃখের সাথী হতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিকে (বিএমএ) বিশ্বমানের হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এর মাধ্যমে প্রশিক্ষিত ও আধুনিক সেনাবাহিনী বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আমরা মাথা উঁচু করে চলতে চাই।

বুধবার ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ৭৫তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত রাষ্ট্রপতি প্যারেডে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিকে (বিএমএ) বিশ্বমানের হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এর মাধ্যমে প্রশিক্ষিত ও আধুনিক সেনাবাহিনী বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আমরা মাথা উঁচু করে চলতে চাই।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনী জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেনাবাহিনীকে বিপন্ন মানুষের পাশে দাড়াতে হবে কারণ তারা দেশের সন্তান। তোমরা দায়িত্ব পালনে সদা প্রস্তুত থাকবে। সিনিয়রদের নির্দেশ মেনে চলবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা ইস্যুতে সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে তাদের ধন্যবাদ জানান। একইসঙ্গে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মনে রাখবে অনেক রক্ত আর ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের এই স্বাধীনতা। কাজেই এ দায়িত্ব পালনে তোমাদের সজাগ ও সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। যাতে এই স্বাধীনতা নিয়ে যেন কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে।’

আজকের দিনটি কমিশনপ্রাপ্ত সেনাসদস্যদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ থেকে তোমাদের ওপর ন্যস্ত হচ্ছে দেশমাতৃকার মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব। সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময় হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাই হবে তোমাদের জীবনের প্রথম ও প্রধান ব্রত।’

নতুন কমিশনপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের জনগণের পাশে থাকার এবং দেশসেবার আহ্বান জানিয়ে তাঁদের প্রতি শুভকামনা জানান প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া দেশ-বিদেশে দায়িত্ব পালনে সেনাবাহিনীর সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসাও করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তোমাদের মনে রাখতে হবে, তোমরা এ দেশের সন্তান। জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই তোমাদের সকলকেই সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে। দাঁড়াতে হবে যে কোনো দুর্যোগ ও দুঃসময়ে বিপন্ন মানুষের পাশে।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী একটি খোলা জিপে করে সুসজ্জিত প্যারেড পরিদর্শন করেন এবং সালাম গ্রহণ করেন।

এর আগে সকাল হেলিকপ্টারযোগে বিএমএতে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুর ১২টার সময় একটি খোলা জিপে করে সুসজ্জিত রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।পরে তিনি বিশেষ কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পাসিং আউট ক্যাডেটদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

এ সময় সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মুহাম্মদ শফিউল হক এবং বিএমএ কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল সাইফুল আলম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, জাতীয় সংসদের সদস্য, নৌবাহিনীর প্রধান, সরকারের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, কূটনৈতিক, আমন্ত্রিত অতিথি এবং কমিশনপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

কুচকাওয়াজের মধ্যদিয়ে ৩৫০ জন ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন। যার মধ্যে ৩৪৩ জন বাংলাদেশি, পাঁচজন ফিলিস্তিনের এবং দুজন শ্রীলঙ্কার নাগরিক রয়েছেন।

এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর নৌবাহিনীর একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে চট্টগ্রাম এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই দিন বিকালে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসায় আসেন শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে।

আজকের বাজার : এলকে ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭