দ্বিতীয়ার্ধে এডিআর কমেছে

ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত বা এডিআর যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রচলিত ধারার ব্যাংকের জন্য অগ্রীম-আমানত হার সর্বোচ্চ ৮৩ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ইসলামী শরীয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংক এবং প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য বিনিয়োগ-আমানত হার বা এডিআর সর্বোচ্চ ৮৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সার্কুলারে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

গতকাল সোমবার ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণার প্রাক্কালে এডিআর নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ধরণা করা হচ্ছে ঋণ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে প্রথাগত ব্যাংকগুলোর ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর ) ৮৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ইসলামী ব্যাংকের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮৮ শতাংশ করতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তবে মঙ্গলবার দেখা গেল ওই অনুপাতে না কমালেও প্রথমার্ধের চাইতে প্রচলিত ধারার ব্যাংকের জন্য অগ্রীম-আমানত হার বা এডিআর কমেছে ১দশমিক ৫ শতাংশ।

আর ইসলামী শরীয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংক এবং প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য বিনিয়োগ-আমানত হার বা এডিআর কমেছে মাত্র ১ শতাংশ।

গতকাল মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছিলেন, এডিআর কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে আগামী জুন মাস পর্যন্ত ব্যাংকগুলোকে সময় দেওয়া হবে।

তিন গতকাল বলেন, আমরা ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত বা এডি রেশিও যৌক্তিকভাবে নির্ধারণের জন্য একটি গাইড লাইন মেনে করি।এবারও সেই গাইড লাইন মেনে এই রেশিও নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর সার্বিক অবস্থা, এনপিএলসহ (নন পারফরমিং লোন) বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তা নির্ধারণ করা হবে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ২০টি প্রচলিত ধারার ব্যাংক তাদের ঋণ-আমানত অনুপাত বা এডিআর এর সীমা অতিক্রম করেছে। আমরা তাদের সীমার মধ্যে আসার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। যাতে আগামী ৬ মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিক অবস্থানে আসতে পারে।

তার মতে, ব্যাংকগুলো আমানত বাড়ানোর মাধ্যমে এটি করবে বলে তাদের কোনো ক্ষতি হবে না।

এদিকে বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো আজকের সার্কুলারে, সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতের মূলধন ভিত্তি, তারল্য পরিস্থিতি, আন্তঃব্যাংক নির্ভরশীলতা এবং সর্বোপরি ব্যাসেল-৩ অনুসারে এলসিআর ও এনএফএসআর এর নির্ধারিত মাত্রা সংরক্ষণের বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে বলা হয়েছে। এবং এসব আর্থিক সূচকে ব্যাংকগুলোর অবস্থান অধিকতর সুসংহত করার এবং আমানতের প্রবৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অগ্রিম প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এখন হতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত প্রচলিত ধারার ব্যাংকের জন্য অগ্রিম-আমানত হার সর্বোচ্চ ৮৩.৫০ শতাংশ এবং ইসলামী শরীয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংক এবং প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য বিনিয়োগ-আমানত হার সর্বোচ্চ ৮৯.০ শতাংশ নিধারণ করা হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, বর্তমানে যে সকল ব্যাংকের অগ্রীম-আমানত হার বা বিনিয়োগ-আমানত হার সীমার বেশি রয়েছে সে সকল ব্যাংক-কে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ক্রমান্বয়ে তা নির্ধারিত মাত্রায় আবশ্যিকভাবে নামিয়ে আনতে হবে।

শুধু তাই নয় এ লক্ষ্যে একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নপূর্বক আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনে দাখিল করতে হবে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

আজকের বাজার:এলকে/ ২৯ জানুয়ারি ২০১৮