ব্রাদার্সকে হারিয়ে শীর্ষে ঢাকা আবাহনী

????????????????????????????????????

বছরের শেষ দিনটা বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য একরকম ‘বড়দিন’ হয়েই এসেছে বলা চলে। তবে থার্টি ফার্স্ট নাইট নিয়ে যতো উৎসাহ সবার সেই হিসেবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ কোন তুলনায়ই আসে না। কেই বা খবর রাখে হঠাৎ শিরোপার দাবিতে তিন ক্লাবের দ্বৈরথে জমজমাট হয়ে ওঠা লিগটির! তবু আকর্ষণ যাদের কাছে থাকার তাদের কাছে আছে। আর শিরোপা প্রত্যাশী ঢাকা আবাহনী ঠিকই জয় দিয়ে শীর্ষ স্থান ধরে রেখে পা রাখল নতুন বছর ২০১৮-তে।

রোববার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ঢাকা আবাহনী ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের খেলার খোঁজ দুই ক্লাবের পাড় সমর্থকদের রাখতেই হয়েছে। দু’দলের জন্যই ম্যাচটি যে ছিল মহারণ! সেটি অবশ্য দুই অর্থে। আবাহনী পয়েন্ট খোয়ালে চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে পড়তো শঙ্কায়। আর ব্রাদার্সের পয়েন্ট হারানো মানে রেলিগেশনের দুর্ভাবনা। এমন ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ২-০ গোলে হারিয়ে লিগে পয়েন্ট টেবিলের এক নম্বর জায়গাটা ধরে রেখেছে আবাহনী। একই মাঠে দিনের দ্বিতীয় খেলায় মুখোমুখি হবে দ্বিতীয় স্থানে থাকা শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও তৃতীয় স্থানে থাকা চট্টগ্রাম আবাহনী। ওই ম্যাচের ফলে ওই দুই দলের অবস্থানেই পরিবর্তন আসতে পারে কেবল। দুই ম্যাচ হাতে রেখে ঢাকা আবাহনী একটু এগিয়েই থাকলো দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে। এই জয়ে ২০ ম্যাচে ৪৮ পয়েন্ট হলো আবাহনীর। সমান ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট ব্র্রাদার্সের।

এদিন আবাহনী লিমিটেড ম্যাচ বের করে নিল সত্যিকার অর্থেই ভালো খেলে। তাই ব্রাদার্স ড্র করলে বা জিতে গেলে সেটি চমক বা অঘটনই হয়ে আসতো। প্রথম পর্বে ব্রাদার্সকে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল আবাহনী। দ্বিতীয় পর্বেও জয় আবাহনীর।
ম্যাচে অবশ্য গোলের সবচেয়ে বড় সুযোগটা প্রথম তৈরি করলো ব্রাদার্সই। ২১ মিনিটে গোলটা পাওয়া উচিত ছিল গোপীবাগের ক্লাবটির। কমলা জার্সীর খেলোয়াড়রা হঠাৎই আক্রমণে উঠলো ডান প্রান্ত দিয়ে। আবাহনী গোলরক্ষক বেরিয়ে গেলেন পোস্ট ছেড়ে। দারুণ এই সুযোগে সালাউদ্দিনের ক্রস থেকে নুর রহমান জোসেফ হেড করলে সেই বল রুখে দেন আবাহনী ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশা। গোলরক্ষকহীন পোস্টে বল ঢোকাতে ব্যর্থ ব্রাদার্স।

উল্টো ৩১ মিনিটে ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরীর গোলে এগিয়ে গেল আবাহনী। ইমন মাহমুদের নেওয়া কর্নার কিক ইচ্ছে করেই কি গ্রিপ করলেন না ব্রাদার্স গোলকিপার সুজন চৌধুরী? প্রিমিয়ার লিগে এমন গোলকিপিং প্রশ্ন তুলতেই পারে। এই সুযোগটা কেনই বা কাজে লাগাবে না আবাহনী? ব্রাদার্স গোলকিপারের হাত গলে বল সরাসরি এলো নাসিরের পায়ে। যা জালে জড়াতে ভুল করলেন অভিজ্ঞ এই খেলোয়াড়।
ওই এক গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আবাহনী। বিরতি থেকে ফিরে ৫৯ মিনিটে রুবেল মিয়ার গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আকাশী-নীলরা। গোলকিপার সোহেলের নেওয়া লম্বা গোলকিক থেকে ব্রাদার্সের ডি-বক্সের সামনে থেকে হেড করে বল নিজের নিয়ন্ত্রনে নেন রুবেল মিয়া। একক প্রচেষ্টাতেই ডি-বক্সে ঢুকে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। সত্যিই এটি ছিল দেখার মতো।
আবাহনী আরো বড় ব্যবধানে জিততে পারতো। কিন্তু বেশ কিছু আক্রমণ স্টাইকারদের ব্যর্থতায় ভেস্তে যায়। একই রকম চিত্র ছিল ব্রাদার্সেরও।

দুই দল :
ঢাকা আবাহনী : শহীদুল আলম (গোলকিপার ও অধিনায়ক), নাসির উদ্দিন চৌধুরী, ওয়ালি ফয়সাল, সামাদ ইউসুফ, ইমন মাহমুদ, সোহেল রানা, রুবেল মিয়া, সাদ উদ্দিন (মামুন মিয়া), সানডে সিজোবা (এমেকা ডার্লিংটন), টুটুল হাসান বাদশা, নাবিব নেওয়াজ জীবন (ফাহাদ)।

ব্রাদার্স ইউনিয়ন : একরামুজ্জামান লিটন, আশরাফুল করিম, মোঃ সালাউদ্দিন, মোঃ মেসবাহ, ফ্র্যাঙ্ক, মোঃ মাসুদ রানা (মিথু ভূইয়া), বিপ্লব, আরিফ খান জয়, নুর রহমান জোসেফ (বিশাল দাস), অ্যাডাম স্যামুয়েল (অধিনায়ক) (সিও জুনাপিও), সুজন চৌধুরী (গোলরক্ষক)।

আজকের বাজার: সালি / ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭