রোহিঙ্গা ইস্যুতে ট্রাম্পের কাছে কিছু চাওয়ার নেই: হাসিনা

নিউইয়র্কে ‘জাতিসংঘের সংস্কার: ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন’ বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তবে এই ইস্যুতে ট্রাম্পের কাছে কোনো সহায়তা চাননি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃতি করে এ খবর প্রকাশ করেছে।

৭২তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে নিউইয়র্কে অবস্থান করা অনেক রাষ্ট্রনেতার মতোই শেখ হাসিনাও গতকাল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ বৈঠকে অংশ নেন। এর এক ফাঁকে রয়টার্সকেও বিশেষ সাক্ষাৎকার দেন তিনি।

রয়টার্সকে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ট্রাম্পের সঙ্গে মিনিট খানেক কথা হয়েছে। তিনি জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশের কি অবস্থা? আমি তাকে বলেছি সব কিছুই ভালো। তবে বর্তমানে রোহিঙ্গা শরানার্থীরাই দেশের জন্য কিছুটা সমস্যা তৈরি করছে।

অথচ ট্রাম্প এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করেননি বলে জানান শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, শরনার্থীদের বিষয়ে ট্রাম্পের যে মনভাব, সে কথা ভেবেই তার কাছে এ বিষয়ে কোনো সহায়তা চাইনি।

তিনি বলেন, যারা শরানার্থীদের আশ্রয় দেবে না বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছে, তাদের কাছে আমি কি সহায়তা চাইবো? বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, তিনি তো তার মনোভাব আগেই জানিয়েছেন। তাহলে তার কাছে আমার কি চাওয়ার আছে?

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ধনী দেশ নয়। তবে আমরা যখন ষোল কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারছি, তখন বাড়তি পাঁচ সাত লাখ মানুষকে খাওয়ানো কষ্ট হবে না।

এদিকে গতকাল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। ওই আলোচনাতেও রোহিঙ্গা ইস্যু এসেছে। সুষমা স্বরাজ বলেছেন, ভারত অবশ্যই বাংলাদেশের সঙ্গে আছে, সবসময় এবং এ সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে।

পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সংবাদমাধ্যমকে জানান, ইউএনএইচসিআরের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডিও সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সংস্থাটি বাংলাদেশ সফর করতে চায় এবং সব ধরনের সহায়তা করতে চায়।

এদিকে একই দিনেই ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্যোগে আয়োজিত এক বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে চীন, রাশিয়া, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্কসহ বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মায়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অংশ নেন বলে জানান শহীদুল হক।

তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনা তার বক্তব্য তুলে ধরবেন। ওই ভাষণে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের বিষয়ে বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব থাকবে।

২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার পর ওইদিনই জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজকের বাজার : এলকে/এলকে ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭